কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় ঈদের দিন ভিন্নধর্মী এক মানবিক দৃশ্যের জন্ম দিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। পবিত্র ঈদুল আজহার দিন বৃষ্টির মধ্যে ভিজেই তিনি পৌঁছে দেন কোরবানির মাংস, আর তা কোনো সাধারণ মানুষকে নয়—স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের সংগ্রামে শহীদ এবং আহতদের পরিবারের মাঝে।
শনিবার (৭ জুন) ঈদের নামাজ আদায়ের পর তিনি দেবিদ্বার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামায়াতে অংশ নেন। নামাজ শেষে দেবিদ্বার নিউমার্কেট এলাকায় এনসিপির উদ্যোগে তিনি ৪টি গরু কোরবানি দেন শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে। এরপর শুরু হয় মাংস বিতরণ কর্মসূচি—একেবারে নিজ হাতে, বৃষ্টির মধ্যেই, ঘরে ঘরে গিয়ে।
এই সময় তিনি জুলাই বিপ্লবের শহীদ ১৪ জন ও আহত ৬০ জনের পরিবারের কাছে গিয়ে তাদের খোঁজখবর নেন এবং তাদের হাতে তুলে দেন কোরবানির গোস্ত।
মাংস বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন,
“আজ ঈদের দিন শহীদ পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার চেষ্টা করেছি। আজকে শহীদ রুবেল ও সাব্বিরের পরিবারের যে পরিস্থিতি, সে জায়গায় আমরাও থাকতে পারতাম। আল্লাহর কাছে দোয়া করছি আল্লাহ যেন এই শহীদদের জান্নাতবাসী করেন।”
তিনি আরও বলেন,
“তাদের শহীদ হওয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। কারণ তারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। এই দেশ গড়ার দায়িত্ব আমাদের। আমরা যেন এই দেশকে যথাযথভাবে গড়তে পারি। তাদের রক্তের দায় যেন আমরা দিতে পারি। দলমত পথের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করব।”
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও জানান, এনসিপির পক্ষ থেকে আগেই স্পষ্ট করে বলা হয়েছে—
“এপ্রিল মাসে নির্বাচন করতে হলে, চলতি বছরের জুলাই মাসের মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ দিতে হবে। পাশাপাশি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে ভোটের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।”
এ সময় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরাও তার সঙ্গে ছিলেন। তারা শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর এই মানবিক উদ্যোগে অংশ নেন এবং ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন।
এই আয়োজন শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না, বরং শহীদ পরিবারগুলোর জন্য এটি ছিল এক ব্যতিক্রমী ঈদ। হাসনাত আবদুল্লাহর এই উদ্যোগে যেমন উঠে এসেছে রাজনৈতিক দায়িত্ববোধ, তেমনি ফুটে উঠেছে মানবিকতা ও সংবেদনশীলতা।
তথ্যসূত্রঃ দৈনিক জনকণ্ঠ
নিউজ র্যাটর ২৪ ঘণ্টা বাংলার খবর