এনসিপি নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল (ভিডিও সহ)

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) খুলনা জেলার নেতা আবু বক্কর সিদ্দিকের একটি আপত্তিকর ভিডিও সম্প্রতি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই খুলনা জেলার কয়রা উপজেলাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, অভিযুক্ত আবু বক্কর সিদ্দিক কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দেয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আব্দুল মালেক গাজীর পুত্র। বর্তমানে তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টির খুলনা জেলা সমন্বয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, এনসিপি নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক একজন নারীর সঙ্গে ভিডিও কলে অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছেন। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর এলাকাজুড়ে নানারকম আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কয়রা উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্যসচিব মারুফ বিল্লাহ বলেন, “আবু বক্কর সিদ্দিক ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্বৈরাচার সরকারের আইনজীবী প্যানেলের সদস্য ছিলেন। এখন এনসিপির খুলনা জেলার কমিটিতে তার নাম দেখে আমরা বিস্মিত।”

তবে ভিডিওটি অনেকদিন আগের বলে দাবি করেছেন এনসিপি নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি এর সঙ্গে বর্তমান সময়ের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেন।

কয়রা উপজেলা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সভাপতি মোস্তফা শফিকুল ইসলাম বলেন, “আবু বক্কর সিদ্দিকের ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি খুবই আপত্তিকর। এ ধরনের লোকজনকে প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হবে না। তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করা উচিত।”

জাতীয় নাগরিক পার্টির খুলনার সংগঠক মো. রাহাত হোসেন বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। যেহেতু এটি তার একান্ত ব্যক্তিগত নৈতিক স্খলন, এর দায় কোনোভাবেই সংগঠন নেবে না। তারপরও এ বিষয়ে তার কাছে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তিনি যদি উপযুক্ত জবাব দিতে না পারেন, তাহলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক ও খুলনা অঞ্চল পরিচালনা কমিটির সদস্য ওহিদুজ্জামান বলেন, “এই ভিডিওটি সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে কোনো ব্যক্তির দায় সংগঠন নেবে না।”

এই ভিডিও ভাইরালের ঘটনা খুলনা অঞ্চলের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় জনগণের একাংশ মনে করছেন, রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিগত চরিত্র মূল্যায়নের বিষয়েও দলগুলোকে দায়িত্ব নিতে হবে। তবে এনসিপি দাবি করছে, এটি ব্যক্তিগত আচরণ এবং সংগঠন এ বিষয়ে দায় নেবে না।

আবু বক্কর সিদ্দিকের ভিডিও ফাঁসের ঘটনাটি শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, বরং গোটা সমাজের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিগত নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, আর তা ভবিষ্যতে দলগুলোর প্রতিক্রিয়ায় কেমন প্রভাব ফেলে, সেটাই দেখার বিষয়।

তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ

Leave a Reply